Meta Tag: --------------------- 24 Hours Bd News kushtia 24 Hours Bd News kushtia: বিজেপিকে ঘিরে নানা প্রশ্ন

Monday, March 4, 2019

বিজেপিকে ঘিরে নানা প্রশ্ন


ভারতের শাসক দলে কি সমন্বয়ের অভাব ঘটল? বিজেপির বিভিন্ন নেতার মন্তব্যের রকমফেরের দরুন প্রশ্নটি বড় হয়ে উঠেছে। ভোটের মুখে এই প্রশ্ন ঘিরে ক্রমেই বড় হয়ে উঠছে শাসক ও বিরোধী দলের রাজনৈতিক তৎপরতা।
মতান্তর পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের বালাকোটে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের সাফল্য ঘিরে। ১৪ ফেব্রুয়ারি ঘটা পুলওয়ামা-কাণ্ডের বদলা নিতে ২৬ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় বিমানবাহিনী বালাকোটে হানা দেয়। ভোররাতের সেই হামলার পর ভারত দাবি করে, সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জইশ-ই-মুহাম্মদের ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সন্ত্রাসীদের প্রভূত ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ কী, হতাহতের সংখ্যাই-বা কত, সরকারিভাবে তা বলা হয়নি। কিন্তু ‘সরকারি সূত্র’ অথবা ‘সেনাবাহিনী সূত্র’ উদ্ধৃত করে খবর প্রচারিত হয়, জঙ্গি, ফিদায়েঁ, প্রশিক্ষকসহ তিন থেকে সাড়ে তিন শ জনের মৃত্যু হয়েছে। ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে জঙ্গি শিবির। নিহত হয়েছেন পাকিস্তানে আশ্রিত জঙ্গিনেতা মাসুদ আজহারের ভাই। কিন্তু অভিযানের এত দিন কেটে গেলেও সরকারিভাবে আজও বলা হয়নি ঠিক কতজনের মৃত্যু হয়েছে। কতগুলো জঙ্গি শিবির ধ্বংস করা হয়েছে।
আর এই ধোঁয়াশাকে ঘিরে যেমন শুরু হয়েছে সরকার ও বিরোধীদের রাজনৈতিক তরজা, তেমনই উঠে গেছে শাসক দল বিজেপির মধ্যে সমন্বয়হীনতার প্রশ্ন।

গত রোববার বিজেপি সভাপতি এবং বিজেপির এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দুই প্রদেশে দুই ধরনের মন্তব্য করেন। সভাপতি অমিত শাহ গুজরাটের আহমেদাবাদে এক জনসভায় বলেন, ‘উরি হামলার পর আমাদের সেনারা পাকিস্তানে গিয়ে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হেনেছিল। পুলওয়ামা-কাণ্ডের পর সবাই ভেবেছিল, আর কোনো প্রত্যাঘাত হবে না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বিমান হানা হলো এবং আড়াই শতাধিক জঙ্গির মৃত্যুর ঘটল।’ অমিত শাহ এক কদম এগিয়ে এ কথাও বলেন, আমেরিকা ও ইসরায়েলের পর ভারতই তৃতীয় দেশ, যারা এভাবে প্রতিশোধ নিল।
অমিত শাহর এই দাবির কিছু আগে বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া কলকাতায় সংবাদমাধ্যমকে একহাত নিয়ে বলেন, ‘মিডিয়া অযথা জল্পনার খেলায় নেমেছে। প্রধানমন্ত্রী কিছু বলেননি, সরকারের পক্ষ থেকেও কিছু বলা হয়নি, সভাপতি অমিত শাহও ক্ষয়ক্ষতির সংখ্যা জানাননি। অথচ মিডিয়া অসমর্থিত খবর প্রচার করছে।’ তিনি বলেন, ‘ক্ষয়ক্ষতির লক্ষ্য নিয়ে ভারতীয় বিমানসেনারা প্রত্যাঘাত করেনি। করেছে এই বার্তা দিতে যে আমাদের ক্ষমতা কতখানি। চাইলে আমরা কী করতে পারি।’
দলীয় সভাপতি ও সরকারের মন্ত্রীর মন্তব্যের এই অসামঞ্জস্যতা নিয়ে বিরোধী মহল যখন সরব, ​তখনই এল ভারতীয় বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল বীরেন্দ্র সিং ধানোয়ার মন্তব্য। গতকাল সোমবার রাজধানী দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বালাকোট অভিযানে নিহত জঙ্গির সংখ্যা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘মৃতদেহ গুনে দেখা আমাদের কাজ নয়। আমরা দেখি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হানতে পেরেছি কি না। সেই দিক থেকে আমাদের এই অভিযান সফল। লক্ষ্যে আঘাত হেনেছি। সেই হানায় কতজনের মৃত্যু হয়েছে, কতজন আহত, ক্ষতির পরিমাণ কতটা, সরকার সেই তথ্য দিতে পারবে।’ ধানোয়ার এই মন্তব্যের দিন কয়েক আগে বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে অবশ্য বলা হয়েছিল, ক্ষয়ক্ষতির যাবতীয় প্রমাণ সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। কখন, কীভাবে, কতটা তা প্রকাশ করা হবে, তা সরকারই ঠিক করবে।
একদিকে সরকার, শাসক দল ও বিমানসেনার বক্তব্যের এই অসামঞ্জস্যতা, অন্যদিকে পশ্চিমা মিডিয়ার অন্য ধরনের দাবির দরুন বালাকোট অভিযানের সাফল্য ঘিরে নানাবিধ প্রশ্ন উঠে গেছে। বিরোধীদের মধ্য থেকে প্রমাণ দেওয়ার দাবি যেমন উঠেছে, তেমনই অভিযোগ করা হচ্ছে, ভোটের স্বার্থে শাসক দল দেশের সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করছে। রাজনৈতিক তরজা চলছে নিত্য। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, আজ রাফাল যুদ্ধবিমান হাতে থাকলে পাকিস্তানের একটা বিমানও ফিরে যেতে পারত না। জবাবে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী বলেছেন, ‘সে জন্য প্রধানমন্ত্রী আপনিই দায়ী। ৩০ হাজার কোটি রুপি অনিল আম্বানিকে দিতে গিয়ে আপনিই রাফাল নিতে দেরি করেছেন। আপনার জন্যই অভিনন্দনদের জীবনের ঝুঁকি নিতে হচ্ছে।’

No comments:

Post a Comment